বাটার(Butter)
বাটার(Butter)মাখন। যা একটি দুগ্ধজাত পন্য। রন্ধন শিল্পে একটি বিশেষ অবস্থান রয়েছে বাটারের। বাটার বিশ্বের রন্ধনপ্রনালী ও অঞ্চল জুড়ে ব্যবহৃত সবচেয়ে অবিচ্ছেদ্য উপাদান গুলোর একটি। কালিনারিতে বেকিং এর জন্য অন্যতম হাতিয়ার। বিভিন্ন ধরনের রান্নায় স্বাদের মাত্রা বৃদ্ধি করতে বাটারের বিকল্প নেই। বিশেষ করে বেকারি পন্য তৈরিতে বাটারের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি মূলত তেল ও ইমালশনের পানির একটি অংশ। তেলের বিকল্প হিসেবে বাটার ব্যবহার করা হয়। এছাড়া তেলের থেকে বাটাররের তৈরি খাবারের স্বাদ ও পুষ্টি অনেকগুন বেশি। বাটারের খনিজ উপাদান শোষণের ক্ষমতা রয়েছে, যা আমাদের ক্ষুদা হ্রাস করতে পারে। এটি স্যাচুরেটেড ফ্যাটের উৎস।
ইতিহাস
৮০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে প্রাচীন আফ্রিকায় বাটারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। আফ্রিকার একজন মেষপালক ভেড়ার দুধের একটি থলি নিয়ে ভ্রমণ পথে প্রচন্ড ঝাঁকুনির সৃষ্টি হয়। ফলে দুধ থেকে ফ্যাট আলাদা হয়ে ক্রিম তৈরি হয়। সেখান থেকেই বাটারের উৎপত্তি বলেই জানা যায়। তবে এর সঠিক তথ্য সকলেরই অজানা। এরপর গরু, ভেড়া, ইয়াক, ছাগল, মহিষের দুধ থেকেও বাটার তৈরি করা হয়। তবে অবশ্যই তা ফুল ফ্যাট দুধ হতে হবে। ৩০০০ বছর ধরে ভারতে কৃষ্ণকে বাটার/মাখন প্রদান করে। বাইবেলে উল্লেখ আছে আব্রাহাম ও তার সাথে থাকা ৩ জন দর্শনার্থী দেবদূতকে মাখনের তৈরি একটি খাবার খাওয়ার অনুরোধ করে। এছাড়া আরো নানা ধরনের ঘটনা-রটনা রয়েছে এই বাটারকে নিয়ে। প্রথমদিকে মাখনের কিছু অস্তিত্ব পাওয়া যায় রোমান ও আরবীয় উৎস হতে। ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের মানুষ একে তেলের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করত। উত্তর ইউরোপের উপজাতিদের প্রিয় ছিল বাটার। তারা এতই পছন্দ করত যে গ্রীক কবি ‘অ্যানাক্স্যান্ড্রাইডস’ তাদের উপহাস করে উল্লেখ করেন “butter-eaters”। ১২ শতকে উত্তর ইউরোপে বানিজ্যিকভাবে বাটার উৎপন্ন শুরু হয়। বিভিন্ন তথ্যসূত্র হতে দেখা যায় যে স্ক্যান্ডিনেভীয়ান বনিকেরা প্রতি বছর প্রচুর পরিমান বাটার রপ্তানি করত। স্প্রেড তাদের অর্থনীতির একটি কেন্দ্রীয় অংশ হিসেবে পরিচিত ছিলো। এটি নরওয়েতে জীবন রক্ষার অন্যতম উৎস হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।যার জন্য সেখানকার রাজা প্রতি বছর ট্যাক্স হিসেবে ১ বালতি বাটার দাবি করেছিলেন।
পরিচিতি
দুগ্ধজাত পন্যের অন্যতম একটি হলো মাখন(Butter) । সাধারণত গরুর দুধ থেকে তৈরি করা হয়। তবে ভেড়া, ছাগল, মহিষের দুধ থেকেও তৈরি করা হয়। মূলত হেবি বা ভাড়ী ক্রিম থেকে বাটার তৈরি হয়। সম্পূর্ণ ফুল ফ্যাট দুধ থেকে ক্রিমকে আলাদা করে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বাটার তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রে উটের দুধ থেকে বাটার তৈরি করা সম্ভব নয়। কারণ উটের দুধে ফ্যাটের পরিমান কম থাকে। ফ্যাট, পানি ও দুগ্ধ প্রোটিন বিদ্যমান থাকে বাটারে। যেখানে প্রায় ৮০% ফ্যাট, ১৬-১৮% পানি ও ২% খনিজ থাকে।
প্রকার
সব কিছুর পরে মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে তাই না? যে সব বাটার কি একই রকম হয়? উত্তর- না। বহুবছরের শীল্পন্নায়ন ও প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বাটার তৈরি শুরু হয়। এসকল বাটারের ভিন্নতার উপরে এর ব্যবহার হয়ে থাকে। বাটারের প্রকার সম্পর্কে জানতে হলে বাটার কথন ২ পড়ার অনুরোধ রইল।