COOKING OIL/ রান্নার তেল
রন্ধনশিল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনগ্রিডিয়েন্ট এর মধ্যে অন্যতম হলো কুকিং ওয়েল/তেল। যা ছাড়া রান্না অসম্পূর্ণ হয়ে যায়। তবে ঠিক কোন ধরনের কুকিং ওয়েল কোন ধরনের রান্নায় ব্যবহৃত হয়, কোন ওয়েল স্বাস্থ্যকর আর কোনটা অস্বাস্থ্যকর এ বিষয়ে জানাটাও প্রয়োজন। রন্ধনশিল্পকে শুধু রান্না হিসেবে নয় এটাকে রপ্ত করতে হলে প্রয়োজন গভীর জ্ঞান, গবেষণা, জানার প্রবল ইচ্ছে।
যাই হোক, এবার আসি মূল বিষয়ে। রান্নায় ব্যবহৃত তেল এর মধ্যে আমাদের দেশে বহুলভাবে ব্যবহার করা হয় সরিষা ও সয়াবিন তেল। কিন্তু এছড়াও রয়েছে আরো অনেক ধরনের তেল। এক এক ধরনের রান্নায় এক এক ধরনের তেল ব্যবহার হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর ও অস্বাস্থ্যকর এ বিষয়টিকেও মাথায় রাখতে হয়। রান্নায় ব্যবহৃত তেল এর মধ্যে রয়েছে নানা ধরনের ফ্যাট/চর্বি। এর মধ্যে উল্লেখ্য ৪ ধরনের ফ্যাট- স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্স ফ্যাট, মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট।
স্যাচুরেটেড ফ্যাট –
স্যাচুরেটেড ফ্যাট হলো ফ্যাট এর মধ্যে একটি ক্ষতিকর ফ্যাট। যা স্বাস্থ্যঝুকির সৃষ্টি করে। এতে পরিশোধিত শর্করা ও চর্বির পরিমান বেশি থাকে। যা ফাস্টফুড খাবারগুলোতে বিদ্যমান। নারকেল তেল, মাখন, ঘী, পাম ওয়েল এগুলো স্যাচুরেটেড ফ্যাট এর অন্তর্ভুক্ত। যা এলডিএল কোলেস্টেরলের পরিমান বাড়িয় দেয়।
ট্রান্স ফ্যাট-
এই ফ্যাট ও ক্ষতিকর ফ্যাটগুলোর একটি। যা ব্লাডে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এতে থাকে ক্ষতিকর মার্জারিন। যা শরীরের জন্য অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট-
এই তেল এ স্বাস্থ্যকর চর্বি রয়েছে। যা শরীরের প্রয়োজনীয় ও উপকারি ফ্যাট। এই ফ্যাট ব্লাডে চর্বির পরিমান কমায়, কোলেস্টেরল কমায়, রক্তকে জমাট বাঁধা থেকে প্রতিরোধ করে। অ্যাভোকাডো অয়েল, ক্যানোলা অয়েল, অলিভ অয়েল, আলমন্ড অয়েল, সাফ্লাওয়ার (Safflower/কুসুম ফুলের তেল) অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল এগুলোতে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট বিদ্যমান থাকে।
পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট-
এটিও মনোস্যাচুরেটেড তেল এর মতোই প্রয়োজনীয় ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বহন করে। যা কোলেস্টেরল, ব্লাডের চর্বি কমাতে সাহায্য করে ও রক্তকে জমাট বাঁধা থেকে প্রতিরোধ করে। এতে রয়েছে প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড ওমেগা-৩ ও ওমেগা- ৬। কর্ন অয়েল, ফ্লাক্সসিড অয়েল, সয়াবিন অয়েল এগুলোতে পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট বিদ্যমান থাকে।
যেকোনো তেলে যদি স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট এর পরিমান কম থাকে ও মনোস্যাচুরেটেড, পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এর পরিমান বেশি থাকে (যেমন- ১৫ গ্রাম তেলে প্রায় ২ গ্রাম পরিমান স্যাচুরেটেড ও ট্রান্স ফ্যাটও নেই অন্যদিকে মনোস্যাচুরেটেড ও পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি পরিমানে থাকে) তবে তা স্বাস্থ্যকর তেল।
#শুধুমাত্র ফ্যাট এর বিষয় জানলে হবে না। আরো অনেক বিষয় সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা লাভ করতে হবে। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তেলের তাপমাত্রা সহন ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা। কারণ অতিরিক্ত তাপের কারণে তেল জ্বলে গিয়ে ক্ষতিকর রাসায়নিককে পরিনত হয়। যাকে বলা হয় স্মোক পয়েন্ট।
এছাড়া আরো একটি বিষয় হলো ওমেগা৬ ও ওমেগা৩ এসিড এর অনুপাত সম্পর্কে জানা। বৈজ্ঞানিক মতে আদর্শ অনুপাত হলো ২:১ – ৪:১ এর মধ্যে থাকা।