Crayfish(ক্রেফিশ)
Crayfish(ক্রেফিশ) ক্রাস্টেসিয়ান ইফ্রাঅর্ডার Astacoida(আস্তাকয়েডা) এর অন্তর্গত। এরা Astacoida(আস্তাকয়েডা) ও Parastacoida (প্যারাস্টাকয়েডা) সুপার ফ্যামিলি এর সদস্য (শ্রেণীগতভাবে)। এদের পালকের মতো ফুলকা থাকে যা দ্বারা এরা শ্বাস নেয়। এরা মিঠা পানিতে বাস করে। সাধারণত এরা অপরিষ্কার পানিতে থাকতে পারে না। তবে কিছু প্রজাতি থাকতে পারে এদের মধ্যে রয়েছে Procmbarus(প্রকম্বারুস), Clarkii(ক্লার্কই), Hardier(হার্ডিয়ার)। এরা জীবিত, পচনশীল প্রাণী, গাছপালা, ডেট্রিটাস খায়। কিছু অঞ্চলের নোনা পানির প্রজাতিদের ক্ষেত্রে ‘ক্রেফিশ’ নাম ব্যবহার করা হয়।
ক্রেফিশ নামের উৎপত্তি
ক্রে একটি পুরাতন ফরাসি শব্দ escrevisse(এস্ক্রেভাস) থেকে এসেছে। একে ফিসের সাথে যুক্ত করে এর নামকরণ করা হয় ক্রেফিশ। কিছু কিছু ক্রেফিশ কে স্থানীয়ভাবে লবস্টার বলা হয়। এর মধ্যে আছে Yabbies(ইয়াবি), Crawdads(ক্রোউড্যাড), Mudbugs(মাডবাগ)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি ক্রেফিশ নামে পরিচিত। আবার দক্ষিণ-পশ্চিমে ‘এ্যাফিশ’ উত্তরে ‘ক্র্যাড্যাড’ হিসেবে পরিচিত। বইয়ের ভাষার ক্রেফিসকে Astocology বলা হয়।
এনাটমি
এরা ডেকাপড এর অন্তর্ভুক্ত। এদের দেহ লবস্টার ও স্রিম্প(Prawn) এর শরীরের ২০টি অংশ নিয়ে গঠিত। এদের শরীরে দুইটি প্রধান অংশ রয়েছে। অংশ দুটি cepholothorax(সেফালোথোরাস্ক) ও Abdomen(এবডোমেন) এ বিভক্ত থাকে। এদের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮ থেকে ৭ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এদের চলাচলের জন্য ৪টি ছোট নখর থাকে।
২টি ছোট এন্টিনা আর ২ টি বড় অ্যান্টিনা রয়েছে। এদের সামনের ১ জোড়া বড় পা রয়েছে শিকার করার জন্য। যাকে বলা হয় ‘চেলিপ্যাড’। ছোট অ্যান্টিনার মাঝের সরু অংশকে নালী বলা হয়। এদের পাখাযুক্ত লেজের মধ্যম অংশে টেলসন এবং বাইরের দিকে ইরোপডস থাকে। পেটের নিচে ৫ জোড়া Swimmerets রয়েছে। অন্যান্য ক্রাস্টেসিয়ান্দের মতো এরাও এক্সোস্কেল্টন মলেটিং এর মাধ্যমে পরিবর্তন করে।
ক্রেফিশের প্রজাতি বর্ণনা
বর্তমানে ক্রেফিসের চারটি পরিবার সনাক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে তিনটি পরিবার উত্তর গোলার্ধে ও একটি পরিবার দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থান করে। দক্ষিণ গোলার্ধে যে পরিবার থাকে সেটি হল Parastacidae(প্যারাস্টাসিডি), এর ১৪ টি বংশ আছে ও দুইটি বিলুপ্ত বংশ আছে। এরা দক্ষিণ আমেরিকা, মাদাগঙ্কারে ও অস্ট্রেলিয়াতে বাস করে। উত্তর গোলার্ধের তিনটিঔ পরিবার Astacoida(আস্তাকয়েডা) এর অন্তর্ভুক্ত। এদের মধ্যে চারটি বংশ পশ্চিম ইউরেশিয়া ও উত্তর-পশ্চিম আমেরিকায় বাস করে।এদের ক্যাম্বারিড পরিবারের ১৫ টি বংশ পূর্ব আমেরিকায় আছে। ক্যাম্বারিড হল একক বংশ এরা পূর্ব এশিয়ায় বসবাস করে।
সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ-পূর্ব, উত্তর আমেরিকাতে ক্রেফিশের প্রজাতির বৈচিত্র্য রয়েছে। এদের ১৫টি জেনারেশনের প্রায় ৩৩০টির বেশি প্রজাতি আছে। এরা ক্যাম্বারিড পরিবারের। এছাড়া Astacoida ক্রেফিসের একটি প্রজাতি। প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিম ও মহাদেশীয় ভাগের কিছু নদীতে এদের পাওয়া যায়।
এরা নিম্নভূমির অঞ্চলগুলোতেও থাকে। কিছু উপকূলে জলাভূমিতেও এদের দেখা মেলে। এদের প্রায় আটটি প্রজাতি আছে যারা আইওয়াতে থাকে। লুইসিয়ানাতে প্রতিবছর ক্রেফিস ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড (৪৫ মিলিয়ন কিলোগ্রাম) উৎপাদন করে।
ইতিহাস
ক্রেফিস কাজুন সংস্কৃতির সাথে শত শত বছর ধরে সংযুক্ত। তারা বাণিজ্যিকভাবে ক্রেফিশের আইকনোগ্রাফি করেন। যার ফলে এখানে নানা ধরনের কুটির শিল্প গড়ে উঠেছে। তাদের বিভিন্ন পণ্যগুলোর মধ্যে ক্রেফিশের টি শার্ট লোগো, সোনা রুপার নেকলেস, কানের দুল তৈরি করা হয়।
অস্ট্রেলিয়াতে বারটি জেনারেশনে ১০০ টির বেশি প্রজাতি রয়েছে। যা বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম স্বাদুপানির ক্রেফিশের বসবাসস্থল। উত্তর তাসমানিয়ান নদীতে প্রায় ৫ কেজি(১১ পাউন্ড) পর্যন্ত ক্রেফিস পাওয়া যায়। নিউজিল্যান্ডের প্যারানোফ্রপসে দুটি স্থানীয় প্রজাতি রয়েছে যা মাওরি নামে পরিচিত। সারা বিশ্বে এশিয়াকে কেন্দ্র করে প্রধানত চীন ক্র্যাফিস উৎপাদন করে। ২০১৮ সালে এশিয়ান ক্রেফিস সরবরাহ হয় ৯৫%। সুইডিশ কুইজিনে ক্রেফিশ অন্যতম খাদ্য। এখানে পশ্চিম উপকূলে সামুদ্রিক ক্রেফিস বেশি খাওয়া হয়। মিঠা পানিতে ক্রেফিশ চাষ করা হয়। বিভিন্ন রান্নায় এর ব্যবহার রয়েছে। এরা এদের মোলট হওয়া এক্সোএস্কেলটন খায়। এতে থাকা ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস এদের পুনরায় এক্সোস্কেলটন তৈরিতে সাহায্য করে। এরা সর্বযুক্ত প্রাণী বলে আখ্যায়িত।