Types of Onion and trick of using Onion
কালিনারিতে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় উপকরণের মধ্যে রয়েছে পিঁয়াজ। রান্নায় এর ব্যবহার, স্বাদ, ঘ্রাণ, টেক্সচারকে অসাধারণ করে তোলে। আজ কালিনারিতে বহুল ব্যবহৃত কয়েক ধরনের পিঁয়াজ, এর ব্যবহার ও ব্যবহারের কৌশল সম্পর্কে জানবো।
Yellow Onion(ইয়েলো অনিয়ন)
Yellow Onion(হলুদ পিঁয়াজ) এর বিকল্প নাম Brown Onion(ব্রাউন অনিয়ন)। এই পিঁয়াজ গোলাকার, কাগজের মতো পাতলা ও বাদামী বর্ণের খোসা হয়ে থাকে। এটি বহুমুখী পিঁয়াজ হিসেবেও পরিচিত। যেকোনো রান্নাতে এর ব্যবহার হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বহুল ব্যবহৃত সাধারণ পিঁয়াজগুলোর মধ্যে ইয়েলো অনিয়ন অন্যতম। এর আরো কিছু জাত রয়েছে – গ্লোব অনিয়ন, স্প্যানিশ অনিয়ন। সব ধরনের কুইজিন এর সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে। এটি স্টির-ফ্রাই, ইতালিয়ান স্টাইল রেড সস, স্প্যানিশ পেয়ালা এর মতো খাবার গুলোর বেসিক উপকরণ। এর বিকল্প নাম- Purpel Onion( পার্পেল অনিয়ন)। এটি লালচে বেগুনি বর্ণের হয়। এর খোসা একটু পুরু। সালাদে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ। সব ধরনের পিঁয়াজের মধ্যে লাল পিঁয়াজের গন্ধ তীক্ষ্ণ হয় বেশি। এ কারণে রান্নায় অন্য সব পিঁয়াজের তুলনায় এটি পরিমাণে কম ব্যবহার করা হয়। পিকলিংয়ের জন্য রেড অনিয়ন সবচেয়ে ভালো। পিকেলড অনিয়ন মাশলা হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
White Onion(হোয়াইট অনিয়ন)
White Onions(সাদা পিঁয়াজ)। এর খোসা অনেক পাতলা হয় ও পিঁয়াজের ভেতরের রঙ সাদা হয়। একারণে এই পিঁয়াজকে হোয়াইট অনিয়ন বলা হয়। কাঁচা অবস্থায় রসালো ক্রাঞ্চের জন্য এটি পরিচিত। একারণে ল্যাটিন আমেরিকান ও সেন্ট্রাল আমেরিকান খাবারে এটি বেশি ব্যবহৃত হয়। মেক্সিকান খাবারে গার্নিশের জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। সালসা, গুয়াকামোলে (কাঁচা সস) তৈরিতে এই পিঁয়াজ ব্যবহার করা হয়। এছাড়া টাকোস, এনচিলাডাসের মতো জিনিসগুলোকে আরো সুস্বাদু করে তোলে।
Sweet Onion(সুইট অনিয়ন)
মিষ্টি পিঁয়াজ, এতে সালফারের ঘনত্ব কম হওয়ায় চিনি আলাদা হয়ে যায়। এজন্য বেশি মিষ্টি স্বাদের হয়। এর আরো কিছু জাত হলো- ভিডালিয়া অনিয়ন, ওয়াল্লা ওয়াল্লা অনিয়ন, মাউই অনিয়ন। অনেকেই এটাকে কাঁচা খেতে পছন্দ করে। ক্যারামেলাইজ করতে এটা অনেক ভালো। এছাড়া স্ট্যুতেও ব্যবহার করা হয়।
Scalion(স্ক্যালিয়ন)
স্ক্যালিয়ন এর বিকল্প নাম গুলো- গ্রিন অনিয়ন, স্প্রিং অনিয়ন, বাঞ্চিং অনিয়ন, চাইনিজ অনিয়ন, ওয়েলস অনিয়ন। এটি ক্ষুদ্র বাল্ব থেকে লম্বা ফাপা গোলাকার সবুজ পাতা হয়ে বৃদ্ধি পায়। সময় ও জাতের উপর নির্ভর করে এটি মোটা, সরু, সাদা, বেগুনি হয়। এই পিঁয়াজ দক্ষিণ এশিয়ান কুইজিনে জনপ্রিয়ে একটি উপকরণ। ক্লাসিক কোরিয়ান প্যানকেক প্যাজিওনের মতো খাবারগুলোতে এটি ব্যবহৃত হয়। টাটকা হার্বস হিসেবেও এটি ব্যবহার করা হয়।
Spring Onion(স্প্রিং অনিয়ন)
এটি স্ক্যালিয়ন পিঁয়াজের মতো। তবে এটি স্ক্যালিয়ন পিঁয়াজ নয়। আলাদা জাতের পিঁয়াজ। এর ব্যবহার স্ক্যালিয়ন পিঁয়াজের মতোই হয়।
Pearl Onion(পার্ল অনিয়ন)
মুক্তা পিঁয়াজ। এর বিকল্প নাম- হোয়াইট ককটেইল অনিয়ন। এটি খুব ছোট মুক্তার মত ও সাদা রঙের।এছাড়া হলুদ/লাল রঙেরও হয়ে থাকে। এটি মিষ্টি ও সুন্দর ঘ্রাণের জন্য পরিচিত। সাধারণত স্টুড, ক্রিম তৈরি, পিকেলড পার্ল অনিয়ন যা ক্লাসিক মার্টিনিতে গার্নিশ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
Ramps( র্যাম্পস)
র্যাম্পস এর বিকল্প নাম-টেনসি ট্রাফলস, ওয়াইল্ড লিকস, রামসন, আইল ডেস বোইস। এটা উত্তর আমেরিকার স্থানীয় স্প্রিং অনিয়ন। এর পাতা কান্ডের মতো যা বাল্ব পর্যন্ত বিস্তৃত। এর স্বাদ স্ক্যালিয়নের থেকেও সুস্বাদু। এর বেগুনি ও সাদা অংশ ফ্রাই করা হয়। পাতা গুলো গার্নিশের জন্য ব্যবহৃত হয়।
Cipoline(সিপোলিন)
সিপোলিন এর বিকল্প নাম সিপোলিনি অনিয়ন, ইতালিয়ান অনিয়ন। এটি মিষ্টি জাতের পিঁয়াজগুলোর মধ্যে একটি। এর খোসা হলুদ হয়। এটি অন্যসব পিঁয়াজের থেকে কম তীক্ষ্ণ। এগুলো রান্না এবং পরিবেশনের জন্য ব্যবহার করা হয়।
পিঁয়াজ ব্যবহার করার কৌশল এবং টিপস
পিঁয়াজ বহুমুখী সবজি যা বিভিন্ন ধরণের খাবারে গভীরতা এবং স্বাদ যোগ করে। রান্নায় পিঁয়াজ ব্যবহার করার জন্য কিছু কৌশল এবং টিপস:
1. সঠিক পিঁয়াজ নির্বাচন করা:
হলুদ পিঁয়াজ: হলুদ পিঁয়াজের শক্তিশালী গন্ধ রয়েছে। এটা ভালভাবে ক্যারামেলাইজ হয়, এগুলিকে স্যুপ, স্টু এবং সসে ব্যবহার করা হয়।
লাল পিঁয়াজ: লাল পিঁয়াজ হালকা এবং সামান্য মিষ্টি স্বাদের। এগুলো সালাদ, স্যান্ডউইচ এবং সালসাগুলির জন্য খুব ভালো।
সাদা পিঁয়াজ: সাদা পিঁয়াজ খাস্তা এবং ট্যাঞ্জি হয়। এগুলি মেক্সিকান খাবার এবং তাজা সালসার জন্য ব্যবহৃত হয়।
মিষ্টি পিঁয়াজ (যেমন ভিডালিয়া বা ওয়াল্লা ওয়াল্লা): এগুলি গ্রিল করা বা কাঁচা খাওয়ার জন্য হালকা এবং দুর্দান্ত স্বাদ দেয়।
এরকম ধরণ অনুযায়ী পিঁয়াজ নির্বাচন করতে হবে।
2. চোখের পানি আসা রোধ করা:
পিঁয়াজ ঠাণ্ডা করা: পিঁয়াজ কাটার আগে প্রায় 30 মিনিটের জন্য ফ্রিজে রাখলে পিঁয়াজ কম প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে, যার ফলে চোখের পানি আসা রোধ হয়।
পানিতে ভিজিয়ে রাখা: পিঁয়াজে থাকা যৌগগুলি ধুয়ে ফেলতে পানিতে কিছু সময় ভিজিয়ে রেখে তারপর পিঁয়াজ কাটলে চোখ থেকে পানি কম পরে।
ধারালো ছুরি ব্যবহার: ধারালো ছুরি দিয়ে পিঁয়াজ কাটলে দ্রুত কাটা যায়। ফলে যৌগগুলোর প্রতিক্রিয়া কম ঘটে।
3. চপিং টেকনিক:
ডাইস: পিঁয়াজকে অর্ধেক করে কেটে নিয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে, এরপর অনুভূমিক এবং উলম্ব করে কাটতে হবে। তারপর উলম্বভাবে কেটে নিতে হবে।
স্লাইস: পিঁয়াজ অর্ধেক করে কাটে নিয়ে রিংয়ের মতো পাতলা করে কাটে নিতে হবে।
4. ক্যারামেলাইজিং পিঁয়াজ:
কম এবং ধীরে: সামান্য তেল এবং লবণ দিয়ে কম আঁচে কাটা পিঁয়াজ রান্না করতে হবে। সোনালি বাদামী এবং মিষ্টি হওয়া পর্যন্ত মাঝে মাঝে নেড়ে নিতে হবে। এক চিমটি বেকিং সোডা যোগ করা- এটি পেঁয়াজের পিএইচ বাড়িয়ে ক্যারামেলাইজেশন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে।
5. সতেজতা সংরক্ষণ:
সঠিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ: পিঁয়াজ শীতল, শুকনো এবং অন্ধকার জায়গায় রাখা উত্তম। কাটা পিঁয়াজ ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করলে কিছু দিন ভালো থাকে।
অ্যাসিড ব্যবহার: পিঁয়াজের সাথে কিছুটা ভিনেগার বা লেবুর রস যোগ করলে তাদের রঙ এবং গন্ধ ভালো থাকে।
6. স্বাদ বৃদ্ধি:
পিঁয়াজের গুঁড়া: ডিহাইড্রেটেড এবং গ্রাউন্ড পেঁয়াজ সিজনিং খাবারের জন্য দারুন।
7. গন্ধ দূর করা:
লেবুর রস ও লবণ: পিঁয়াজের গন্ধ দূর করতে লেবুর রস ও লবণ দিয়ে হাতে ঘষে নিলে এর গন্ধ দূর হয়।
স্টেইনলেস স্টিল: পানির নীচে স্টেইনলেস স্টিলের উপর হাত ঘষলে গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।
মনে রাখতে হবে, পিঁয়াজ আয়ত্ত করার চাবিকাঠি হল অনুশীলন। বিভিন্ন ধরনের পিঁয়াজ এবং রান্নার পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা/গবেষনা করে স্বাদ পছন্দ অনুযায়ী খাবার তৈরি করা সবচেয়ে উপযুক্ত।