সেরা মহিলা শেফ
আমি একটা জায়গায় লিখেছিলাম ছেলেরা শেফ হয় আর মেয়েরা হয় রাঁধুনি। হয়তো অনেকে সেই লেখাটি পড়েছেন। আজ আমি রাঁধুনি নামক মাস্টার শেফদের কথা নিয়ে গল্প শুরু করবো। যারা অসাধারণ তাদের কাজে, জ্ঞানে আর পরিচালনায় এবং তারা মেয়ে আর তারা সেরা। আমার ইচ্ছে আছে এইভাবে দুনিয়ার ১০০ মহিলা শেফ নিয়ে লেখার। প্রতিটি পোস্টে একজন করে শেফের সম্পর্কে লিখবো আর কিস্তি হিসেবে আসবে। আজকের লেখায় লিখবো একজন আইরিশ শেফ সম্পর্কে।
Clare Smyth MBE ১৯৭৮ সালে উত্তর আয়ারল্যান্ডে জন্ম নেওয়া একজন আইরিশ শেফ। উনি যুক্তরাজ্যের প্রথম মহিলা শেফ যার রেস্টুরেন্ট তিন তারকা মিশেলিন জিতে ছিলেন।
উনি একসময় আর এক বিখ্যাত শেফ Gordon Ramsey এর রেস্টুরেন্টে হেড শেফে জব করেছিলেন, পরে নিজের রেস্টুরেন্ট Core চালু করেন লন্ডনে এবং যেটা তিন তারকা মিশেলিনে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। রেস্তোরাঁটি একটি মার্জিত, সূক্ষ্ম ডাইনিং রেস্তোরাঁ যেখানে প্রাকৃতিক টেকসই খাবারের উপর জোর দেওয়া হয়। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি আরও একটি রেস্টুরেন্ট খুলেছিলেন অস্ট্রেলিয়াতে যেটির নাম Oncore এবং ইতিমধ্যে সেটি সিডনির অন্যতম সেরা রেস্টুরেন্ট হিসেবে সমাদৃত। প্রথম জীবনে মাত্র পনের বছর বয়সে, ক্লেয়ার একটি স্থানীয় রেস্তোরাঁয় ছুটির সময়কালে চাকরি করেন, সেটি তাকে একজন শেফ হতে অনুপ্রাণিত করে তাছাড়া ক্লিয়ার এর মা
১৬ বছর বয়সে তিনি পোর্টসমাউথ, হ্যাম্পশায়ারের হাইবারি কলেজে ক্যাটারিং অধ্যয়ন করার জন্য স্কুল ছেড়ে যান, রন্ধন স্কুলে থাকার সময় তিনি গ্রেসট হল এ শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করেছিলেন, পরে লন্ডনের টেরেন্স কনরানের রেস্টুরেন্টে ফুল টাইম শেফ হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। একটা সময় তিনি অস্ট্রেলিয়ায় যান কাজ করার জন্য আবার দেশে ফিরে এসে তিনি বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় শেফ হিসেবে কাজ করতে থাকেন। তিনি বিখ্যাত XV রেস্তোরাঁয় দেড় বছর কাজ করেছিলেন। বিখ্যাত শেফ Gordon Ramsey রেস্তোরাঁয় কাজ শুরু করেন এবং ২০০৭ সালে প্রধান শেফ হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি ১৩ বছর তাঁর রেস্টুরেন্টে কাজ করেন।
ক্লেয়ার ২০১৮ সালে প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান মার্কেলের রাজকীয় বিবাহের বিশেষ খাবার পরিবেশন করেন। ক্লেয়ার ২০১৩ সালে যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত ‘ন্যাশনাল শেফ অফ দ্য ইয়ার’ সন্মানে ভূষিত হন এবং যুক্তরাজ্যে গ্যাস্ট্রোনমিতে তার অবদানের আরেকটি স্বীকৃতি এসেছিল ২০১৩ সালে, সে বছর তিনি সন্মানিত অর্ডার অফ ব্রিটিশ এম্পায়ার (MBE) এর সদস্য নিযুক্ত হন। ক্লেয়ার স্মিথ বিশ্বের ৫০টি সেরা রেস্তোরাঁর দ্বারা বিশ্বের সেরা মহিলা শেফ ২০১৮ মনোনীত হন।
২০১৯ সালে আতিথেয়তা শিল্পে তার দক্ষতার জন্য তিনি পরে কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্ট কর্তৃক ডক্টরেটে সম্মানিত হন।
তিনি মাস্টারশেফ (ইউকে এবং অস্ট্রেলিয়া), নেটফ্লিক্সের দ্য ফাইনাল টেবিল, টপ শেফ (ইউএসএ), এবং দ্য লেট শো, তিনি ২০১৭ সালে রাউক্স স্কলারশিপ এর বিচারক প্যানেলে যোগ দিয়েছিলেন এবং সেইসাথে বিশ্বজুড়ে অসংখ্য আন্তর্জাতিক ডেমোতে উপস্থিত হয়েছেন।
তাকে দুনিয়াতে অন্যতম সেরা শেফ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। বিশ্বের অন্যতম সম্মানিত এই শেফ এবং আন্তর্জাতিক রন্ধনসম্পর্কীয় সম্প্রদায়ের একজন সক্রিয় সদস্য হিসাবে সবসময় তরুণ-তরণীদের অনুপ্রাণিত করে থাকেন। তিনি বিশ্বাস করেন, এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে পরবর্তী প্রজন্মের শেফদের অনুপ্রাণিত করতে হবে এবং সেটাই তিনি করে থাকেন।
পথে পথে রাজ পথে চেয়ে দেখ রঙের খেলা, ঘর ছেড়ে বাহিরে এসো, এসো হাত ধরি, এসো উল্লাস করি… ঘর থেকে বাহিরে আসতে হবে, দেখতে হবে জগৎটাকে, ভাবতে হবে নতুন কোন সম্ভাবনা নিয়ে আর এগোতে হবে স্বপ্ন বুকে নিয়ে রানারের মত।