সল্টেড বাটার ও আন্সল্টেড বাটার এর মধ্যে পার্থক্য
বাটার হলো ক্রিম ও পানির ইমালশন ফ্যাট। ঘন বা ফুল ফ্যাটযুক্ত দুধ থেকে ক্রিমকে পৃথক করে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বাটার তৈরি করা হয়। স্প্রেড, মশলা, বেকিং প্রায় সব ধরনের রন্ধনশৈলতে বাটারের ব্যবহার লক্ষনীয়। যে ধরনের বাটারই ব্যবহার করা হোক এটি রান্নায় যোগ করলে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করে অসাধারণভাবে। বাটার ক্রিমি, টেন্ডার ও ফ্লেকি টেক্সাচারের হয়। বাটারের অনেকগুলো ভেরিয়েশনআছে। প্রকারভেদে এর স্বাদ, গন্ধ, ব্যবহারের পার্থক্য রয়েছে। তবে আনসল্টেড ও সল্টেড বাটার বহুল ব্যবহৃত হয়। এই দুটি বাটার AA গ্রেডের বাটার। আনসল্টেড ও সল্টেড বাটারের এর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আমাদের আজকের মূল বিষয় আনসল্টেড ও সল্টেড বাটারের মধ্যে পার্থক্য।
![](https://chef-xavier.com/wp-content/uploads/2024/03/সল্টেড-বাটার-Vs-আন্সল্টেড-বাটার-1.png)
১।পরিচিতি
আনসল্টেড: ফুল ফ্যাট দুধ থেকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে ক্রিমকে আলাদা করে বাটার তৈরি করা হয়।আর এই বাটারকে অন্য কোনো প্রক্রিয়া না করে সম্পূর্ণ Raw বা প্রকৃতিক অবস্থায় রাখার পর যেটা পাওয়া যায় তাকেই আনসল্টেড বাটার বলা হয়।
সল্টেড বাটার: আনসল্টেড বাটারকে প্রক্রিয়াজাত করে প্রতি ৪ আউন্স বাটারে ১/৪ চা চামচ পরিমান লবন মিশ্রণ করা হয় বলে এই বাটারকে সলটেড বাটার বলা হয়।
২।রঙ
সাধারণ বাটারে উচ্চ ফ্যাট সামগ্রী থাকে বিধায় বাটারে রঙের পরিবর্তন দেখা যায়।
আনসল্টেড বাটার: আনসল্টেড বাটার প্রক্রিয়া বিহীন ও প্রকৃতিক উপায়ে তৈরি হয় বলে এর রঙ সাদা ক্রিমি কালার হয়। এতে বিটা ক্যারোটিন ও ক্যারোটিন কম থাকে এবং ফ্যাট দ্রবণীয় অবস্থায় থাকে। ফলে এর রঙ সাদা হয়।
সল্টেড বাটার: সল্টেড বাটার হলুদ হয়। এর কারণ এতে মেশানো লবন। লবন মিশিয়ে প্রক্রিয়াজাত করার ফলে এতে ট্রান্স ফ্যাট উৎপন্ন হয় যা উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত করে ও এর রঙ হলুদ হয়।
৩।স্বাদ
আনসল্টেড বাটার: আনসল্টেড বাটারের স্বাদ প্রাকৃতিক। কারণ এতে এক্সট্রা কোন উপাদান মেশানো হয় না। ফলে স্বাদের কোন পরিবর্তন হয় না। এটা সফট, ক্রিম, হালকা মিষ্টি স্বাদ পাওয়া যায়।
সল্টেড বাটার: এতে লবন মিশ্রণের ফলে বাটারের স্বাদের পরিবর্তন হয়। এটা ব্রান্ডের কারণেও লবনের পরিমানের পরিবর্তনে হতে পারে। এছাড়া কোন ধরনের লবন এটাতে মেশানো হচ্ছে প্যাকেটজাত নাকি সামুদ্রিক লবন এগুলোর উপরেরও এর স্বাদের পরিবর্তন হয়। এটা নোনতা স্বাদের হয়।
৪। আদ্রতা
আনসল্টেড ও সল্টেড বাটারের মধ্যে মূল পার্থক্য লবনের। সাধারণ সব বাটার ক্রিম তৈরি হয় মিল্কফ্যাট থেকে। এতে থাকে ৮০% মিল্কফ্যাট ১৮% পানি ও ২% কঠিন পদার্থ। তাই সব বাটারের মশ্চার বা অদ্রতা একই রকম হয়।
৫।টেক্সচার
আনসল্টেড বাটার: এটি একটি বহুমুখী দুগ্ধজাত পন্য। একে মন্থন করে নরম অবস্থায় ক্রিমি টেক্সারে রুপান্তর করা হয়।
সল্টেড বাটার: আনসল্টেড বাটারে লবন মিশিয়ে সল্টেড বাটারে রুপান্তর করা হয়। এতে টেক্সচারের কোনো পরিবর্তন ঘটে না।
৬।সংরক্ষণ
আনসল্টেড বাটার: এটা প্রক্রিয়া বিহীন বাটার। এতে অতিরিক্ত কোন উপাদান ব্যবহার না করে ব্যবহার করা হয়। তাই এটা সাধারণত বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না। তবে রেফ্রিজারেটরে ডিপ করে ৪ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
সল্টেড বাটার: সল্টেড বাটার দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার কারণেই এতে লবন মেশাতে হয়। লবন প্রিজার্ব হিসেবে কাজ করে। তাই দীর্ঘদিন একে সংরক্ষিত রাখা যায়।
৭।ব্যবহার
আনসল্টেড বাটার: এটি বেকিং জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয়। আনসল্টেড বাটার ছাড়া বেকিং কল্পনাও করা যায়। কারণ নির্দিষ্ট কিছু রেসিপি ফলো করে বেকিং করতে হয়। সঠিক পরিমাপ ও সব কিছু ব্যালেন্স করতে আনসল্টেড বাটার ব্যবহার করা হয়।
সল্টেড বাটার: সেই সকল রেসিপিতে এটা ব্যবহার করা হয় যেসকল রান্নাতে লবনকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় না। এসকল খাবারে সল্টেড বাটার ব্যবহার করা হয়। মূলত পাউরুটি, টপিং সবজি, পাস্তা সস, মাংস জাতীয় খাবারে ব্যবহার উপযোগী।