📍Chef Xavier's New Culinary Course is coming! Sign Up Our Newsletter for Update

📍Chef Xavier's New Culinary Course is coming!
Sign Up Our Newsletter for Update

Monkfish

Monkfish

মঙ্কফিশ

মঙ্কফিশ (Monkfish),যার বৈজ্ঞানিক নাম Lophius piscatorious,অতল সমুদ্রের এক বিস্ময়কর প্রাণী। এই মাছটি বিশেষত ইউরোপ ও উত্তর আটলান্টিকের সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে পাওয়া যায় । এটি তার বিস্ময়কর চেহারা এবং অতুলনীয় স্বাদযুক্ত মাংসের জন্য পরিচিত। ভয়ংকর দেখতে এই মাছ সম্পর্কে বিভিন্ন অজানা তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

পরিচিতি

মঙ্কফিশ কয়টি নামে পরিচিত। আমরা বলি মঙ্কফিশ, সন্ন্যাসী মাছ, এছাড়া একে ব্যাঙ-মাছ এবং সামুদ্রিক শয়তান মাছও বলা হয়। আটলান্টিক প্রজাতির এই মাছ কে লোফিয়াস পিস্কাটোরিয়েস আর মেডিটেরিয়ান প্রজাতিকে লোফিয়াস বাডিগেসা নামে ডাকা হয়।

মঙ্কফিশের ইতিহাস

মঙ্কফিশ সুদূর প্রাচীনকাল থেকেই ইউরোপীয়দের খাদ্যাভ্যাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। শুরুর দিকে, এটি মূলত দরিদ্র মানুষের খাবার হিসেবে বিবেচিত হলেও, পরবর্তীতে এটি উচ্চমানের খাবারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।

মঙ্কফিশের বৈশিষ্ট্য

মঙ্কফিশ এর ব্যতিক্রমধর্মী আকৃতির জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। এদের মাথা বেশ বড় ও চ্যাপ্টা, মুখ ধারালো দাঁতযুক্ত এবং শরীর অন্যান্য মাছের তুলনায় অপেক্ষাকৃত পাতলা। এই মাছটি সমুদ্রের গভীরে নিজের শিকারকে ধরে রাখার জন্য বিশেষ ধরনের কৌশল অবলম্বন করে। এটার মাথার উপরে একটু লম্বা অংশ থাকে যা দেখতে শিকারীদের প্রলোভিত করার মত লাগে।

লোফিয়াস প্রজাতির এই ফিশ এর দাঁতগুলো খুব সুচালো হয়, এই দাঁত দিয়ে সে শিকার করা ও খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা পেয়ে থাকে। এর মাথা চ্যাপ্টা, প্রশস্ত আর অনেকটা বড়। প্রশস্ত মুখটি মাথার পূর্ববর্তী পরিধির চারপাশে প্রসারিত এবং উভয় চোয়াল লম্বা ও সূক্ষ্ম দাঁতের ব্যান্ড দিয়ে সজ্জিত। যা ভিতরের দিকে ঝুঁকে আছে। এর মাথার পরের অংশটি কাতাল মাছের মতো অন্যদিকে মাথার পরের বাকি অংশটি যেমন ছোট দেখায় এ অংশটিও তেমন। এর পাখনাগুলো হাঁটার মত কাজ করে সাঁতার কাটার পরিবর্তে। এই ফিশ লম্বায় ৫/৬ ফুট এর মত হয়, ওজন প্রায় ১২/১৪ কেজি পর্যন্ত হয়। পুরুষ মাছ ৭ বছর আর স্ত্রী মাছ ১৩ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।

বাসস্থান

সমুদ্রের জলের ২০ থেকে ১০০০ মিটার পর্যন্ত মঙ্কফিশের জন্য উপযুক্ত আবাসস্থল। এরা সাধারণত সমুদ্রের তলদেশে বিভিন্ন সামুদ্রিক পাথর শৈবালে আর বালুতে নিজেকে লুকিয়ে রাখে। আটলান্টিক মহাসাগর, উত্তর সাগর এবং ভূমধ্যসাগর এ মাছের প্রাথমিক বাসস্থান। এরা রং পরিবর্তন করতে পারে আর পাখনাগুলো আলো হিসেবে ব্যবহার করে অন্য মাছ এর কাছে যায়। এভাবে সে প্রচুর শিকার ধরতে পারে এবং আশেপাশে সাঁতার কেটে যা পায় তাই খায়। গভীর জলের এই ফিশ উত্তর আটলান্টিক থেকে ভুমধ্যসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।

স্বাদ ও পুষ্টিগুণ

মাছের মধ্যে মঙ্কফিশকে বিশ্রী মাছ হিসেবে যতই গননা করা হয়ে থাকুক না কেন কিন্তু এই মাছ সুস্বাদু এর টেক্সচার অনেকটা লবস্টার এর মত। এর মাংস দৃঢ়, মিষ্টি গন্ধযুক্ত, চর্বিহীন এবং সাদা, হালকা ধূসর বা হালকা গোলাপী রঙের, দৃঢ় হয়ে থাকে।

মঙ্কফিশের মাংস অত্যন্ত নরম এবং এর স্বাদ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের তুলনায় বেশ আলাদা প্রকৃতির। এটি ইউরোপ, বিশেষ করে ফ্রান্স ও ইতালির মানুষদের খাবারের তালিকায় বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ফাইন কিচেনের মেনুতে এইটা খুব জনপ্রিয় আর এর লিভার জাপানি ফুডে ব্যবহৃত হয়। মঙ্কফিস কম চর্বি এবং ক্যালোরিযুক্ত। মঙ্কফিশে উপকারী খনিজ, প্রোটিন এবং ভিটামিনে পরিপূর্ণ। এটি সেলেনিয়ামের একটি ভাল উৎস। এই মাছে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হার্ট এবং থাইরয়েড স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া মঙ্কফিশ মস্তিষ্ক-বুস্টিং যেমন ভিটামিন বি৬ এবং বি১২ এ পরিপূর্ণ। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা মঙ্কফিশে- এনার্জি ৭৬ কিলোক্যালরি, চর্বি ১.৫ গ্রাম (যার মধ্যে স্যাচুরেটেড ফ্যাট ০.৩ গ্রাম), প্রোটিন ১৪ গ্রাম, ভিটামিন বি১২, সেলেনিয়াম এবং ফসফরাস সমৃদ্ধ।

রন্ধন প্রক্রিয়া

এই মাছ বহুমুখীভাবে রান্না করার মত একটি সামুদ্রিক মাছ। আপনি এই মাছ, বেক, গ্রিল, পোচ, ভাজা মানে সব কুকিং মেথড এ উপযুক্ত। আপনি তান্দুরি বা মেরিনেট করে রান্না করার আগে এই মাছের সাথে লেবুর জুস দিলে রান্না করার পর এর স্বাদ অসাধারণ হয়ে উঠবে।মঙ্কফিশ এর বিভিন্ন অংশের মধ্যে লেজের অংশ রান্নার জন্য বিশেষভাবে উপযোগী।

পরিবেশগত প্রভাব

মঙ্কফিশ শিকার করার সময় মাঝে মাঝে পরিবেশগত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যেহেতু এটি গভীর জলের মাছ, তাই এদের ধরার পদ্ধতি সমুদ্র তলদেশের বাস্তুসংস্থানের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই টেকসই মাছ ধরার পদ্ধতি অনুসরণ করা অপরিহার্য।

উপসংহার

মঙ্কফিশ শুধুমাত্র এর অদ্ভুত আকৃতির জন্যই নয় বরং এর পুষ্টিগুণ ও অনন্য স্বাদের জন্য ভোজন রসিকদের কাছে অগ্রাধিকার পেয়েছে। এটি রান্না করার সঠিক পদ্ধতি জানা থাকলে এটি যেকোনো খাবারের স্বাদকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিতে পারে।

আমি প্রথম এই মাছ ইউনিভার্সিটির কিচেনে ক্লাসে পাই। প্রথম দেখায় আমার মাছ মনে হয়নি কেমন যেন দেখতে। এর স্কিনটা অনেকটা চুইংগাম এর মত রাবারি হয়। আর এখন আমি প্রতিদিন এই মাছ দেখি, অর্ডার করি, পুরো মাছ বা মাছের স্টেক কুক করি।

Join the Conversation

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *